কত কত দিন ছুঁয়ে যায় কত মাস।
কত কত মাস ছুঁয়ে যায় বছর,
আর বছর জমতে জমতে হৃদয়ের অভ্যন্তরে তৈরি করে স্মৃতিদের হিমালয়।
আমি সেই হিমালয়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে, দুচোখে এক সমুদ্র অবিশ্বাস নিয়ে তোমার
দিকে তাকাই আর বলি, “চলে যাবে, আমি জানি এইবার তুমি চলে যাবে।”
আর তো কিছু নেই তোমায় দেবার,
তোমারও কিছু নেই চাওয়ার,
নতুন কোন কথা নেই,
নতুন কোনো ব্যথা নেই,
নতুন করে দেখারও নেই,
তবুও, তবুও কী দেখো অমন চেয়ে চেয়ে…
কি খোঁজো আমার মাঝে?
কেন আছো এখনো পড়ে?
কেন আছো আমায় ধরে?
কত কত গ্রাম বদলেছে শহরে,
কত কত শহর তলিয়েছে ধোঁয়ায়,
কত কত ধোঁয়ায় হারিয়েছে প্রাণ,
কত কত প্রাণ ছেড়ে গেছে শরীর,
কত কত শরীর ছুঁয়ে গেছে পুরুষ,
কত কত পুরুষ বদলেছে রং,
কেবল তুমি একই রয়ে গেলে।
কি করে কেউ একই রকম থেকে যেতে পারে বলতো?
তুমি কি মানুষ?
কিন্তু, কিন্তু মানুষতো চির পরিবর্তনশীল,
তোমার মধ্যে নেই কেন কোন পরিবর্তন?
কেন চলে গেলে না তুমি?
কেন ভাঙ্গলে না আমার মন?
কেন বানালে না আমায় তোমার অতীত?
কেন হলাম না প্রাক্তন?
একটা মানুষ কি করে অনন্তকাল একই রকম থেকে যেতে পারে বলতো?
আমি জানি এইবার তুমি চলে যাবে, তুমি চলে যাবে আমায় ছেড়ে।
তুমি হাসছো?
কি করে এই বাইশটা বছর একইরকম ভাবে হেঁসে যেতে পারো তুমি?
তোমার রাগ হয় না?
হয় না কোনো অভিমান?
ঝরে যাওয়া শুকনো ফুল গুলোকে কেন রোজ জল আলো-বাতাস দাও?
কেন আরো কয়েকটা দিন সবুজ করে রাখার চেষ্টায় কোনো ক্লান্তি নেই তোমার?
যখন আমার দু চোখ প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে যাবে করছে, তখনও তুমি একইভাবে
আমার পাশে বসে ছুঁয়ে আছো আমার কপাল।
আর আমি তখনও দুচোখে এক সমুদ্র অবিশ্বাস নিয়ে
আমাদের বাইশটি বছরের জমানোর স্মৃতিদের হিমালয়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে
তোমার দিকে একদৃষ্টিতে চেয়ে বলছি…
“অনির্বাণ, আমি জানি এইবার তুমি আমায় ছেড়ে চলে যাবে।”