আজকে ক্লাসে গেলাম না।একদম ভালো লাগছিল না ক্যাম্পাসে বসে আছি।বসে থাকতেই বেশি ভালো লাগছে। বার বার মায়ের কথা মনে হচ্ছে। আহা!মা কত বছর তোমাকে দেখি না।
কাল অনেক ক্ষন বৃষ্টি তে ভিঁজেছি,মনে হচ্ছে আকাশ পাতাল জ্বর আসছে। মার চেহারা মনে করতে পারি না। জানি না মায়ের চেহারা কেমন। মার শরীরের গন্ধ কেমন। মাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকার স্বাদ কেমন আমার জানা নেই।
আজকে বার বার ফুপ্পির কথা মনে হচ্ছে। সামনে সপ্তাহে ফুপ্পির কাছে যাব।
আমার একটা ভয়ংকর দিক সব সময় চোঁখের সামনে ভেসে বেড়ায়। আয়নার মতো স্বচ্ছ। এ দৃশ্য টা আমি কখনো সরাতে পারি না।
আমি দেখলাম অনুসুর্য এদিকে আসছে।আমাকে বলল,
——কিরে দেবযানী আজ ক্লাসে যাস নি কেন, শরীর খারাপ না কি। আজকে ম্যাম চমৎকার করে পড়া বুঝিয়ে দিলো।একদম মগজে ঢুকিয়ে দিয়েছেন।
——আচ্ছা আমাকে নোট দিও। আমি না বুঝলে তোমার কাছে বুঝে নিব।
——তোর এ স্বভাব টা আর গেলো না তুমি করে বলাটা।
—— সেটাই তো ভালো তাই না। আর তোমার হাতে সিগারেট কেন? তুমি তো প্রমিজ করেছো আর টাচ করবে না।
—–অবশ্যই খাব, আমার কথা না শুনলে অবশ্য ই টাচ করবো।
——-দেখো অনুসুর্য , আমার ভয়ংকর একটা অতীত আছে। আমার মস্ত বড় একটা ক্ষত আছে।
—–আমি কোন অতীত চিনি না, জানি না,আমার কাছে বর্তমান ই সব। চল দেবযানী টং চা খাই।
—–আমি এখন রুমে যাব,আমি একটু রেস্ট করব,বিকেলে গুলিস্তান যাব।একটা টিউশানি আছে সেটা কনফার্ম করতে হবে।
—–টিউশানি না করলেও চলে তোর।তুই কিছু ভুলে থাকার জন্য টিউশানি করিস আমি জানি।
আমি আস্তে আস্তে পা বাড়ালাম হলের দিকে।
অনুসুর্য চিৎকার করে বলল,
—–আমি এতো কিছু বুঝি না, তোমাকে ছাড়া আমি কিছু ভাবতে পারি না। তুমি কেন আমাকে বুঝতে পারছ না দেবী।
বিকেলে আমি হাঁটতে লাগলাম, নীল ক্ষেত যাব। একটা বই এর দোকানে যাব।কতগুলো গল্পের বই কিনবো,কবিতার বই ও সাথে।
একটা গল্প মনে হচ্ছে, এক ভদ্রলোক বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি চাকুরী টা ছেড়ে দেন।পুরাতন বই এর দোকান দেন।সারাক্ষণ বই পড়েন।
এই ভদ্রলোক এর কি নাম এ মুহূর্তে মনে হচ্ছে না।আমি হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি , আমার পেছনে পেছনে অনুসুর্য আসছে। অনুসুর্য গান ধরলো,
সেই ভালো সেই ভালো,না হয় না জানো০০০
অনুসুর্য র গান আমার মাথায় ঘোরপাক করতে লাগলো।
অনুসুর্য কে বললাম,
জান এক ভদ্রলোক বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক , চাকুরি বাদ দিয়ে পুরাতন বই এর দোকান দেয়, কিন্তু তার নামটা এ মুহুর্তে মনে হচ্ছে না,তুমি কি এ গল্প টা জান।
—–+তোমার শরীর খুব খারাপ দেবী, হলে চল।
আমি বললাম আমি গুলিস্তান যাব , সেখানে টিউশানি টা কনফার্ম করতে হবে। তারপর যাব কাঁটাবন কনকর্ড ভবনের উজানে। আমার বিশেষ দরকার , একজন আমার জন্য অপেক্ষা করবে।
ক্রমশ ০০০
শাহানা জেসমিন
২১/৮/২২