“শুকতারা! আর ইউ ওকে?”

আরহানের আওয়াজে আমার বন্ধরত চোখ মেললাম। পুনরায় একবার জানালার বাইরে তাকালাম।

কিয়ৎক্ষণ পূর্বে, যেই গাড়িটি আমাদের ফলো করছিলো এবং শুট করছিলো, সেই গাড়িটি খাদে পড়ে যায়। আর বিকট শব্দ হয়। সেই শব্দে চিৎকার করে চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলি।

আরহানের দিকে তাকালাম এবার। অস্থির ভঙ্গিতে বার বার শুধিয়েই যাচ্ছেন, আমি ঠিক আছি কি না!

“ঠিক আছি। কিন্তু, কি ছিলো এটা?”

আমার করা প্রশ্নের প্রেক্ষিতে আরহান বললেন,“তৃষ্ণা বাদে যে তোমার ক্ষতি করতে চেয়েছিলো, এটা তার লোক। আর যে ছিলো, সে তোমাকে মারতে চাচ্ছিলো।”

“আপনি কি করে বুঝলেন, এটা অন্য কেউ? তৃষ্ণা নয়?”

আরহান হালকা হেসে বললেন,“তৃষ্ণা যা করবে, সবটাই সামনে। আর ও মারতে চাবে না।”

আমি আর কিছু বললাম না। এই তিন মাসে এমনটা প্রায়শই ঘটেছে।

আরহান গাড়ি ঘুরিয়ে নিলেন। মূলত ইচ্ছে করেই আরহান এই পাহাড়ি রাস্তায় এসেছেন। এতো দ্রুত চালিয়েছেন বলে, সেই লোকটা বুঝে উঠতে পারেনি আরহানের পরিকল্পনা। অতঃপর যা হবার হলো।

_______________________

আজ অনেকদিন বাদে তৃষ্ণা তার মামনির কাছে যাবে। রেডি হচ্ছে। তৃষ্ণার দুটো বাড়ি। একটাতে ওর মামনি আর বোন থেকে। আর অন্যটা এটা, যেটাতে তৃষ্ণা দুঃখবিলাস করে।

রেডি হয়ে গাড়ি নিয়ে চলে এলো এবাড়িতে। বাড়িতে ঢুকতেই, কিচেন থেকে তৃষ্ণার মামনি তৃষ্ণাকে দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে বলে উঠলো,“বাবাই! তুই এসেছিস!”

তৃষ্ণা হাসলো। মুচকি হেসে জবাব দিলো, “হ্যাঁ মামনি। ছুটকি কোথায়?”

“আরে! মেয়েটা কে নিয়ে না আর পারি না! দেখ গিয়ে, এখনও ঘুমোচ্ছে।”

তৃষ্ণা উৎকন্ঠিত স্বরে বলে উঠলো,“সেসব বাদ দাও তো! আগে এটা বলো, অফিসে যাওনি কেনো আজ?”

“শরীরটা ভালো লাগছে না রে! তিনদিনের ছুটিতে আছি। সব কাজ ম্যানেজারকে বুঝিয়ে দিয়ে এসেছি।”

মামনির কথাটা শেষ হতে না হতেই তৃষ্ণা অস্থির হয়ে গেলো। দ্রুত বেগে মামনির কাছে গিয়ে অগোছালো শব্দে জিজ্ঞেস করলো,“কি হয়েছে তোমার মামনি? বলো নি কেনো? কি হয়েছে?”

মামনি মুচকি হাসলো। মনে মনে ভাবছে, এই ছেলেটা তার কতো খেয়াল রাখে!

“তেমন কিছু না। উইকনেসের জন্যই আর কি। বুঝিসই তো। বয়স হয়ে গিয়েছে। আর বাঁচবোই বা ক’দিন!”

কথাটা শেষ করে সোফায় গিয়ে বসলো মামনি। তৃষ্ণা এগোলো সেদিকে। মামনির সামনে মেঝেতে হাঁটু মুড়ে বসে, মামনির দুই হাত নিয়ে নিজের দু গালে রেখে বললো,“তুমি ছাড়া আমার কেউ নেই মামনি। প্লিজ এভাবে বলো না।”

তৃষ্ণার চোখদুটো ছলছল করছে। আসলেই যে তৃষ্ণার আর কেউ নেই। তৃষ্ণা তার মামনির কোলে মাথা রাখলো। মামনি, তৃষ্ণার মাথার চুলগুলোতে হাত বুলিয়ে বললো, “এতোদিন পর এলি যে! মন খারাপ তোর?”

তৃষ্ণা মাথা তুলে তার মামনির পানে তাকালো। এই একটা মানুষকে কোনো কিছু বলে বোঝানোর প্রয়োজন পড়ে না। সব বুঝে যায়। ম্যাজিক এটা!

আলতো কন্ঠে “হুঁ” বললো তৃষ্ণা। মামনি আর এই নিয়ে প্রশ্ন তুললো না। কেনোনা তিনি মন খারাপের কারণগুলো জানেন।

“ভাইয়া! কখন এলি?”

আওয়াজ পেয়ে সিঁড়ির দিকে তাকালো তৃষ্ণা। দীপ্তিকে দেখেই তৃষ্ণা ঠোঁটের কোন ঘেঁষে লম্বা একটা হাসির রেখা টানলো। মামনি আর দীপ্তি! এই তো তৃষ্ণার পরিবার।

দীপ্তি সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এলো। অনেকটা কাছাকাছি আসতেই তৃষ্ণা বলে উঠলো,“তুই যখন ব্যাঙের মতো নাক ডেকে ঘুমোচ্ছিলি, তখন এসেছি।”

“ভাইয়া!”

“ইস রে! চিল্লাচ্ছিস কেন? সবাই তোর মতো তো বয়রা না।”

“দেখ ভাইয়া! তুই সবসময় আমার সাথে এরকম করে কথা বলবি না।”

তৃষ্ণা ডোন্ট কেয়ার ভাবে বললো,“অবশ্যই বলবো।”

দীপ্তি ওর মায়ের কাছে এসে কান্না কান্না ভাবে বললো,“দেখলে মা! তোমার বাবাই সবসময় আমার সাথে কেমন করে কথা বলে!”

মামনি হাসলো। এই দুইটা এখনও বাচ্চা কালের মতোই ঝগড়া করে।

“ধুর!আচ্ছা আমি যাই। ফ্রেশ হয়ে আসি।” —বলেই দীপ্তি চলে গেলো।

“আচ্ছা মামনি! এদিকে কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো?”

তৃষ্ণার প্রশ্নের প্রেক্ষিতে মামনি বললো,“তোর কাছে আর কি লুকোবো? এতো গুলো বছর পর এই শহরে ফিরেছি তো, এজন্যই আর কি।”

তৃষ্ণার বলার কোনো শব্দ নেই। তবুও কিছু বলতে হবে। এই মুহূর্তে চুপ থাকাটা মানাবে না। তাই বলে উঠলো,“সেসব বাদ দাও। অফিসে কোনো সমস্যা হচ্ছে না তো? সিলেটের মতোই মানিয়ে নিতে পেরেছো?”

“হ্যাঁ! প্রথম প্রথম একটু সমস্যা হয়েছিলো। তবে এই তিনমাসে অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছি।”

তিন মাস আগেই তৃষ্ণার মামনি সিলেট থেকে এই ব্যস্ত নগরীতে পুনরায় পা রেখেছেন। যেখানে ফেলে রেখে গিয়েছিলেন ভাগ্যের নিষ্ঠুর এক ইতিহাস। বিগত আঠারো বছর যাবত তিনি সিলেটে থেকে, তৃষ্ণার বাবার সিলেটের অফিস সামলেছেন। নিজেকে ব্যস্ত রাখার এক প্রয়াস এটা। এই শহরে ফিরে আবার এখানকার অফিসে লেগে গিয়েছেন। খালি হাতে বসে থাকা ভীষণ অপছন্দের লাগে, তার কাছে। এখানে আসার কোনো ইচ্ছে ছিলো না। অনিচ্ছে মেশানো হাজারো কারণ ছিলো। তবুও আসতে হয়েছে। এসেছে মূলত দীপ্তির জন্য। মেয়ের ইচ্ছে ছিলো এই শহরেই পড়াশোনা করবে। ইচ্ছে ছিলো নাকি জেদ সেটা দীপ্তিই ভালো জানে। অগত্যা মেয়ের ইচ্ছেকে প্রাধান্য দিয়ে আবারও ফিরতে এলো এখানে। যেখান এক কাহিনী অসম্পূর্ণ রয়ে গিয়েছিল, হয়তো সেই কাহিনীই সম্পূর্ণ করতে।

_________________

শাওয়ার নিয়ে বেরোতেই বেডে বসে থাকা আরহানকে দেখে, সেদিকেই আমার দৃষ্টি থমকে গেলো। ল্যাপটপ কোলে তুলে কিছু একটা করছেন। পূর্ণ মনোযোগ তার সেদিকেই। আমার নজর উনার গভীর নয়ন জোড়ায়। উনার চোখের অগোচরে আমার চোখের ক্যানভাসে উনাকে আঁকছি। মুগ্ধ এই নজরে দেখে যাচ্ছি আমার সামনে থাকা চাঁদকে। যা একান্তই আমার নিজের। মাথা নিচু করে হালকা হাসলাম।

এখানে আর দাঁড়িয়ে না থেকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে এগিয়ে গেলাম। আমার আরহানের পাশে এসে দাঁড়ানোতে আরহান চোখ তুলে তাকালেন। উনার স্থির দৃষ্টি আমার আপাদমস্তক অবলোকন করে নিলো।

হুট করেই ল্যাপটপটা পাশে রেখে উঠে দাঁড়ালেন। আমার কাছে এগিয়ে এসে হাত থেকে টাওয়াল নিয়ে বললেন,“চুলগুলোও ঠিক মতো মুছতে পারো না! নাকি আমাকে দিয়ে চুল মোছানোর ধান্দা!”

কথাটা শেষ করেই হালকা হেসে পুনরায় আবার বললেন,“দেখো! এরকম হলে এতো ভনিতা না করে সরাসরি বলে দিলেই পারো। আমার অবশ্য ভালোই লাগবে।”

আরহানের এহেন কথায় আমার এতক্ষণের লজ্জা, মুগ্ধতার পরিসমাপ্তি ঘটলো। চোখ বড় বড় করে আয়নাতে, পেছনে দাঁড়িয়ে আমার ভেজাচুলগুলো মুছতে থাকা এই লোকটির দিকে তাকালাম। প্রায়শই আরহান এরকম ভাবে কথা বলে আমাকে লজ্জায় ফেলে দেয়। তবে এখন লজ্জা শরমের ধারের কাছে না গিয়ে মুহূর্তেই আবিষ্কার করে ফেললাম,‘এই লোকটা একটা বিশাল আকারের অসভ্য ও নির্লজ্জ।’ নয়তো কি এভাবে কেউ কথা বলে?

মনের মাঝে আরো একটা কথা এলো,‘লোকটা ইন্ট্রোভার্টই ভালো ছিলো।’

“হয়েছে। এখন, এখানে বসে পড়ুন তো শুকতারা।”

ভেজা টাওয়েলটা পাশে রেখে আমাকে একথা বলে সামনের টুলে বসিয়ে দিলেন আরহান। এক নজর পুনরায় আমাকে দেখে বললেন,“আজ আমার এই মিষ্টি বউকে নিজ হাতে সাজাবো আমি।”

নাহ্! আর পারলাম না। লজ্জা না পেয়ে আর থাকতেই পারলাম না। আরহানের কথাটা শেষ হতে না হতেই আমার গাল দুটো ঈষৎ রক্তিম বর্ণ ধারণ করছে। কান দিয়ে যেনো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। অজান্তেই ঠোঁট প্রশস্ত হয়ে গিয়েছে।

আরহান ড্রয়ার থেকে একটা বক্স বের করলেন। এতে ঝুমকো আছে অনেকগুলো। সবগুলোই আরহানের পছন্দের। কানে পরিয়ে দিলেন সেখান থেকে একজোড়া ঝুমকো। দুই হাত ভরে চুড়ি পড়িয়ে দিলেন। এরপর হাঁটু মুড়ে মেঝেতে আমার ঠিক সামনে বসে পড়লেন। আমার পায়ের দিকে হাত বাড়াতেই আমি পিছিয়ে নিলাম।

আরহান একটা শ্বাস ফেললেন। বোধহয় বিরক্ত হলেন। পুনরায় আমার পা এগিয়ে নিয়ে, পায়েল পরিয়ে দিলেন। চির কাঙ্ক্ষিত এই স্পর্শগুলোয় অনুভব করছি, যেনো কেউ আমার বুকে ঢেউ তুলে দিচ্ছে। হৃদপিন্ড অস্বাভাবিক। দম হয়তো গলায় আটকে আছে। আমার উন্মাদের মতো হাসফাঁস করতে থাকা অবস্থায়ই আরহানের সজ্জাকার্য পুরন হলো।

_____________________

দুপুরের কড়া রোদে ছাদে এসেছে রুশী। ভেজা কাপড় গুলো মেলে দিচ্ছে। ক্ষণে ক্ষণে রুশীর হৃদপিন্ড অচল হয়ে আসে। বার বার রুশী মনে করে, এই যেনো তার শেষ নিশ্বাস। রুশী যে আর আগের রুশী নেই। চঞ্চল, প্রাণোচ্ছল, মিষ্টি রুশী আজ যেনো পাথর বনে গিয়েছে। হাসি নেই রুশীর ঠোঁটে। কান্না গুলোও যেনো শুকিয়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে রুশীর, এই শরীরকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলতে। অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ আছে যে এতে। রুশী ভেতরে ভেতরে মরে গিয়েছে। প্রতি ক্ষণে প্রার্থনা করে, যেনো মাটির এই শরীরটাও মাটিতে মিশে যায়। এই ভারী শরীর বহন করতে পারছে না রুশী।

“কি গো বউ! এতক্ষণ ছাদে কি করো? দুপুরের রান্দুন লাগবো না?”

দাদী শাশুড়ির ডাক পেয়ে রুশী জোরালো আওয়াজে “আসছি” বলেই দ্রুত নিচে চলে গেলো। এই বাড়ির নিয়ম আছে এটা, সব কাজ করার জন্য লোক থাকলেও, রান্নাটা বাড়ির বউকেই করতে হয়। সেই হিসেবেই রান্নায় লেগে গেলো। যদিও তার শাশুড়ি সবকাজেই সাহায্য করে।

রান্না শেষ করতেই তার খেয়ালে এলো, সামনে পরীক্ষা। এই সুযোগে যদি একটাবার ছেলেটাকে দেখা যায়!

দ্রুত পায়ে নিজের রুমে এলো। বন্ধের দিন আজ। তার স্বামী বাড়িতেই আছে। রুমে গিয়ে তার সামনে দাঁড়ালো।

“শুনছেন! একটা কথা বলার ছিলো।”

রুশীর আওয়াজ পেয়ে মারুফ ফোন রেখে রুশীর পানে চাইলো। মৃদু স্বরে “বলো” বললো।

অনুমতি পেয়ে রুশী বললো,“দুই সপ্তাহ বাদে আমার পরীক্ষা আছে। আমি কি পরীক্ষা দিতে পারি?”

মারুফ সঙ্গে সঙ্গে কোনো প্রতি উত্তর করলো না। মিনিট পাঁচেক ভেবে, বললো,“আচ্ছা।”

তিনমাসে আজ প্রথম রুশীর ঠোঁটে হাসি এলো। অনেক সূক্ষ্ম হাসি। আগের মতো মিষ্টি হাসতে ভুলে গিয়েছে রুশী। এই হাসিতে কেবল বিষ আছে। না পাওয়ার বিষ।

________________________

সামনে এতগুলো বই দেখে আমার চক্ষু চড়কগাছ। মাথা আউলিয়ে যাচ্ছে। আমিতো এই কয়েকমাসে অলসতার দেবী হয়ে গিয়েছি। পড়া লেখা! কিভাবে কি?

পুনরায় বই থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আরহানের দিকে নিক্ষেপ করলাম। আমার অসহায়ত্ব দেখেও আরহানের বেখেয়ালি ভাব, আমার রাগ উঠাচ্ছে। হ্যাঁ! ভীষণ রকমের রাগ হচ্ছে।

“এগুলো কি?”

আমি তেজী কন্ঠে জিজ্ঞেস করলাম আরহানকে। একই ঢং-এ থেকেই আমাকে বললেন,“বই এগুলো। কেনো দেখতে পাচ্ছো না?”

আমার আরেকটু কাছে এসে আমাকে ব্যঙ্গ করে বললেন,“বলি চোখেও কি সমস্যা হয়েছে নাকি? আগে বলবে না? চলো ডক্টর দেখাতে হবে।”

হেসে ফেললেন আরহান। আমার রাগ এখন আকাশচুম্বী। এরকম ভাবে মজা নেয় কেনো এক লোক?

চিল্লিয়ে বলে উঠলাম,“ইয়ার্কি হচ্ছে এখানে? আমি পড়ালেখা করবো না।”

“আচ্ছা। নিড রোমান্স, না? ওকে! আ’ম রেডি। কাম।”

চোখ দুটো বিশালের চেয়েও বিশালাকার ধারণ করলো। লোকটা আস্ত একটা অসভ্য। নয়তো কেউ এভাবে বলে? ধুর! উনার সাথে রাগ দেখিয়ে লাভ নেই। রাগকে রাগ হিসেবে নিলে তো!

মুখটা অসহায় করে মিনমিনে কন্ঠে বললাম,“দেখুন না! এখন কিভাবে এতো কিছু পড়বো?”

“সে আমি কিছু জানিনা। অনেক তো গায়ে হাওয়া লাগিয়ে নিশার সাথে নেচে কুঁদে বেড়ালে। সামনে এক্সাম আছে। এখন একটু পড়াশোনা করুন ম্যাম।”

আরহানের কথায় আর কিছু বললাম না। ঠিকই বললেন। এতদিন পড়া হয়নি। এখন পড়তে হবে তো। সামনেও এক্সাম।

মুখটায় বিরক্তির ছাপ নিয়ে পড়তে বসলাম। আরহান আমার এরূপ অবস্থা দেখে মিটমিটিয়ে হাসা শুরু করলেন।

______________________

আরহান কিছু কাজের জন্য রুদ্রকে ডেকেছে বাড়িতে। কিছুক্ষণ আগে একটা কল আসায় রুদ্র ছাদে চলে যায়। এখানে এসেই ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা এক অপ্সরীর দিকে নজর থমকে যায়। চাঁদের আলোয় কি স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে তাকে। খোলা চুলগুলো বাতাসের বদৌলতে নেচে উড়ছে। মুখে রয়েছে সেই মোহময় হাসি। হাসার সময় চোখদুটো ছোট ছোট হয়ে যায়। আর বা গালে ডিম্পল পড়ে। আবারো তার দুনিয়া থমকে গেলো এই মায়াবিনীকে দেখে। রুদ্র যেনো হারিয়ে গেলো কোথাও একটা। সেদিনের প্রত্যাখ্যানের কথা ভুলে গিয়ে নিশার দিকে অগ্রসর হলো রুদ্র।

দুই কদম এগোতেই নিশার বলা একটা কথায় রুদ্রের হৃদপিন্ডে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে গেলো। শ্বাস হঠাৎ যেনো আটকে গেলো।

ফোন কানে নেওয়া নিশা ফোনের ওপাশের ব্যক্তিটিকে বলছে,“ভালোবাসি। মনের মণিকোঠায় ভালোবাসা নামক শব্দের আগমনের আগে থেকেই ভালোবাসি। হ্যাঁ, ভালোবাসি আমি। ভীষন রকমের ভালোবাসি।”

চলবে…

About

নবনিতা শেখ

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked

{"email":"Email address invalid","url":"Website address invalid","required":"Required field missing"}