আমি যখন একটি কমলালেবুর দিকে তাকাই
কিংবা একটি আপেলের দিকে তাকাই
অথবা একটি বইয়ের দিকে তাকাই
আমি চন্দ্র দেখি না
আমি সূর্য দেখি না
দেখি না আসমান ভরা তারা নক্ষত্রের মেলা
আমি একটি মুখ দেখি
আধেক চেনা আধেক অচেনা
শত অন্ধকারের ভেতর তবুও এক চেনা কন্ঠস্বর
শত অচেনা মুখের ভিড়ে এক চেনা বটবৃক্ষ।
আমি যখন শ্যামবাজার কিংবা বাদামতলী অথবা মতিঝিল যাই
আমি যখন শনিরআখড়া কিংবা কাজলা অথবা দনিয়া যাই
আমি আলু পেঁয়াজ তরকারি দেখিনা
আমি তরমুজ কিংবা বেল অথবা খেজুর দেখিনা
দেখিনা পান অথবা সিগারেটের ধোঁয়া
আমি একটি মুখ দেখি
আধেক চেনা আধেক অচেনা
শত অন্ধকারের ভেতর তবুও এক চেনা কন্ঠস্বর
শত অচেনা মুখের ভিড়ে এক চেনা বটবৃক্ষ।
আমি যখন কমলাপুর রেলস্টেশন কিংবা চলন্ত ট্রেন দেখি
কিংবা কাঠপট্টির লঞ্চ দেখি
অথবা চাঁদপুরমুখী বেঙ্গল ওয়াটার ঈগল সোনারতরী দেখি
বিলাস সুপার বাস দেখি ঢাকা টু চাঁদপুর
আমি শত শত মানুষের ছবি দেখি না
দেখি না শত শত আয়োজন
আমি একটি মুখ দেখি
আধেক চেনা আধেক অচেনা
শত অন্ধকারের ভেতর তবুও এক চেনা কন্ঠস্বর
শত অচেনা মুখের ভিড়ে এক চেনা বটবৃক্ষ।
আমি যখন বাস্তবে কিংবা কল্পনায়
অথবা আধো জাগরনে আধো নিদ্রায়
ভেসে উঠে কোন শিল্পীর মুখ
ভেসে উঠে কোন ছবির গল্প-গান
আমি গল্প পড়ি না কিংবা শুনি না গান
অথবা রাখি না খোঁজ শিল্পের
আমি একটি মুখ দেখি
আধেক চেনা আধেক অচেনা
শত অন্ধকারের ভেতর তবুও এক চেনা কন্ঠস্বর
শত অচেনা মুখের ভিড়ে এক চেনা বটবৃক্ষ।
আমি একটি মুখ দেখি, শুধু একটি মুখ দেখি
যে মুখ আমার মুখের আয়না—আমার আরশিনগর
আমার এক গনচীনের মহাপ্রাচীর,
উচ্চতর আইফেল টাওয়ার কিংবা বুর্জ খলিফা
অথবা মিশরের মহাচার্য পিরামিড
আমি এক প্রেমের তাজমহল দেখি
আমি একটি মুখ দেখি
আধেক চেনা আধেক অচেনা
শত অন্ধকারের ভেতর তবুও এক চেনা কন্ঠস্বর
শত অচেনা মুখের ভিড়ে এক চেনা বটবৃক্ষ।
আজ সে মুখ ক্লান্ত, শ্রান্তি নিরসনে
আজ তার সমস্ত পান্ডুলিপি করে নিজের সাথে নিজের আয়োজন
যে বৃক্ষ দোলে ঝড় ঝঞ্জা বুকে করে দায়িত্ব কর্তব্য কাজে
সকাল দুপুর সন্ধ্যা আর রাতে;
যে মুখের ভাষা শুধু ইতিবাচক
ঠিক আছে দেখছি
সে মুখ আমি দেখেছি
আধেক চেনা আধেক অচেনা
শত অন্ধকারের ভেতর তবুও এক চেনা কন্ঠস্বর
শত অচেনা মুখের ভিড়ে এক চেনা বটবৃক্ষ।
সে মুখের কি নাম? কি নাম সে হাতযুগলের?
কি নাম সে পদযুগলের? কি নাম সে হৃদয়ের?
আমার অথবা আমাদের সমস্ত নীল বেদনা চুষে—
সে নীলকন্ঠ পাখির কি নাম?
কি নাম সে বটবৃক্ষের? কি নাম সে ছায়াবৃক্ষের?
কি অপরুপ রূপ সে সৌন্দর্যের? কি নাম সে কারুকার্যের?
পৃথিবীর সকল পুষ্পসারথী যেখানে নেই বললেই চলে
পৃথিবীর পথে আর পথে সে চোখ খোঁজে স্বপ্ন
আর বুনে চলে স্বপ্নের জাল আপাদমস্তক ছিন্ন করে ভরা রৌদ্রের জীবন
একদিন — একদিন তার স্বপ্ন আকাশ ছুঁয়ে যাবে!
বাবা
হ্যাঁ বাবা
পৃথিবীর এই একটি শব্দ সমস্ত শব্দের গভীরে
সমস্ত শব্দ এই একটি শব্দের ভিতরে
হামাগুড়ি দিয়ে নতজানু হয়ে যায়।
আমাদের দুঃখ সুখ বিরহ মান অভিমানে
গ্রীষ্ম বর্ষা শরৎ হেমন্ত শীত ও বসন্তে একই গান গায়।
কখনো হাত পা মাথা ব্যাথা করেনি
বলেনি ব্যস্ততা আছে
সব সময় বলেছে ধীর লয়ে বহ বহুদূর।
শাহ্ কামাল
৬ই মার্চ,২০২২
ফতুল্লা