সম্পর্ক টা যখন আত্মীয়তার সম্পর্কের
থেকে ভালোলাগার শুরু হয়েছিলো
কি ভীষণ মুগ্ধতা নিয়ে দেখতাম তোমায়
তখন দেশটা ছিল পরাধীন, উত্তাল ছিল সময়!
ছাত্র আন্দোলনের পুরোটা সময় থাকতে
তুমি ব্যাস্ত ব্যানার মিছিল মিটিংয়ে।
কতো কতোদিন লুকিয়ে লুকিয়ে শুনেছি
তোমাদের গোপনালাপ আড়াল থেকে।
সেসব কথা, মনের কোণে শ্রদ্ধা জাগাতো
তারপর ভালোলাগা বেশি সময় নেয়নি
ভালোবাসায় গড়াতে।
সেসময়ে ভালোবাসাবাসি ছিলো না সহজ
নিজের কাছে নিজেই খুঁজতাম জবাব।
কিভাবে বলবো তোমায়, জেনে ফেলে যদি
ছেড়ে দাও আত্মীয়বাড়ি, করে আমায় নাকচ!
তারপর ও তুমি কিভাবে টের পেয়ে গেলে,
আমার ভয়কে মুক্ত করে নিজের ভালোবাসার
কথা নিজেই পত্রে জানালে!
আবেগে আমি কেঁদে কেঁপে অস্থির হয়েছি,
তারপর মুগ্ধতায় চিঠিটা বারবার পড়েছি!
এভাবেই কিছুদিন কাটতে না কাটতেই
যুদ্ধে যাবার ডাক চলে আসতেই
ডেকে নিলে তুমি বিকেল বেলায় পুকুরঘাটে
বললে, রাতেই চলে যাচ্ছ দলবেঁধে সীমান্তের ওপারে।
প্রথমে ট্রেনিং, তারপর যোগ দেবে সন্মুখ সমরে!
শার্টের পকেট থেকে একখানা রুমালের পুটলি
ধরিয়ে দিয়ে বললে, আমার মা এর দেয়া মাদুলি,
পরিয়ে দাও আমায় যেন ফিরে আসি।
যদি মরি, মা এর দোয়া সাথে নিয়েই মরবো
মুখে নিয়ে স্বদেশের তরে হাসি মুখখানি!
আর বলে গেলে, আমার জন্য অপেক্ষা কোরো
ফিরে এসে দুজন একসাথে ঘর বাঁধবো।
করবো দেশের জন্য অনেক কাজ
গড়বো নতুন দেশে নতুন সমাজ।
মাদুলি পরানোর ছলে, প্রথম স্পর্শ তোমায়
,সেই প্রথম সেই দিন ই শেষ।
অপেক্ষা করে করে পঞ্চাশ বছর পেরোলো
কতজন এলো তুমি এলেনাকো।
আশায় আশায় আজও রয়ে গেছি
মানুষ গড়ার কারিগর হয়েছি।
নতুন দেশ হলো, নতুন সমাজও।
কতোকিছু হলো, কতো বদলালো!
এলেনাকো তুমি দেখলেনা কিছু
চলেছি আমি সময়ের পিছু পিছু!
ফাতেমা_হোসেন
১৪/১২/২১
রাত ৯ টা।