সময় টা ছিলো ১৯৯৭ সালের মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ। এমনই বসন্ত কাল। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছিলাম আত্মীয়ের বিয়ে তে।বিয়ে পর্ব শেষ হয়ে গেলে মেজ ভাসুর আর জা ‘এর সাথে গাজীপুর গেলাম।আমি আর বড়ো ছেলে। ওই বছর ই সে স্কুলে ভর্তি হয়েছে। মেজ ভাই একজন সরকারি কৃষি কর্মকর্তা। তিনি সে সময় সার্ডি তে কর্মরত ছিলেন। অফিসার দের জন্য বরাদ্দকৃত বাসায় থাকতেন। ক্যাম্পাস টা খুবই মনোরম এলাকায়।
আমাদের মেজ ভাবি রোকেয়া রহমান। প্রাণবন্ত এক মানুষ। যেমন পরিশ্রমী তেমনি বন্ধুবতসল।উনি যখন যেখানে যেতেন আশে পাশের মানুষ জন তাঁকে ঘিরে রাখতো। তাতে করে সবাই বিশেষ একটা মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে যেতেন সহজে ই।ভাইয়া তাঁর অফিসে র কাজ আর পোকামাকড় এর জাদুঘর তৈরি তে ব্যাস্ত থাকতেন।পরিবারে সময় দিতে পারতেন না।সেজন্য ভাবিকে একাই সংসারের সবদিক সামলাতে হতো। তার ই ভিতরে আমরা কেউ গেলে উনি নিজ উদ্যোগে কোথাও না কোথাও বেড়াতে নিয়ে যেতেন।
তো সে বার ভাবি ঠিক করলেন শফিপুর আনসার একাডেমি নিয়ে যাবেন। শ্যুটিং স্পট।দেখার মতো জায়গা। সেভাবে তিনি ফ্ল্যাট এর ভাবিদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিলেন।দুপুরে খাওয়ার পর আমরা বিকেলে র কিছু নাস্তা বানিয়ে নিয়ে ওখানে যাব।সেইমতে ভাবি চটপটি চা, অন্য ভাবিরা ফল স্ন্য্যকস কাপ পিরিচ পাটি যা যা লাগে নিয়ে রওনা দিব।ওখানে গিয়ে বিকেলের চা টা সবাই মিলে খাব। ভাই অফিসে র বাস দিয়ে দিলে আমরা রওনা হলাম। এভাবে আমরা শফিপুর গিয়ে পৌছালাম। ওখানে ভাই এর এক বন্ধু লোক পাঠিয়ে আমাদের রিসিভ করলেন।ওই বাসায় বসেই শুনতে পেলাম শাবনূর এসেছে, শুটিং চলছে। জানালা দিয়ে স্টেডিয়াম মত জাগাটায় একটা সিকোয়েন্স এর শুটিং দেখতে পেলাম। এরপর উৎসুক আমরা তড়িঘড়ি করে যখন নেমে এলাম ততক্ষণে শুটিং প্যাক আপ হয়ে গেছে। শুনলাম শাবনূরের এক মামা থাকেন ওখানে, সেই মামার বাসায় সে উঠে গেছে।কি আর করা।আমরা সবাই এলাকা টা ঘুরে ফিরে দেখতে লাগলাম আর সুন্দর সুন্দর স্পটে ছবি তুলতে ব্যাস্ত হয়ে গেলাম। একসময় ক্লান্ত হয়ে এক জাগায় পাটি বিছিয়ে বসে সংগে আনা খাবার দাবার দিয়ে জলযোগ করলাম।এদিকে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই সংগে থাকা সদা রসিক মোল্লা ভাই উঠার জন্য তাড়া দিলেন।আমরা সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে বাসে উঠে বসলাম।
ফাতেমা_হোসেন
১৭/২/২০২২
পল্লবী, ঢাকা।